Hair Care

সায়েন্টিফিক ১০টি উপায়ে হোক সল্যুশন!

Hair Care

লম্বা ঘন কালো চুলের জন্য আমরা কত কিছুই করতে পারি না। কেউ কেউ চুল গজাতে হেয়ার র‍্যাপ ব্যবহার করেন, আবার কেউ কেউ চুলের বিভিন্ন চিকিৎসা পছন্দ করেন। কিন্তু এত কিছুর পরও চুলের বৃদ্ধি এতটা অনুমেয় নয়। এর অবশ্য বেশ কিছু কারণ আছে। চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অনেক কারণের উপর নির্ভর করে। আসুন আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিই নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াগুলো কী এবং উপায়গুলো কী কী।

Hair Care

কোন কোন বিষয়ের উপর হেয়ার গ্রোথ ডিপেন্ড করে?
স্ক্যাল্পের নিচে অবস্থিত ফলিকল থেকে চুল উৎপন্ন হয়। ফলিকলের গোড়ায় থাকা রক্তনালীগুলো চুলে পুষ্টি সরবরাহ করে। চুল মূলত তিনটি ধাপে লম্বা হয়ে থাকে। অ্যানাজেন, ক্যাটাজেন ও টেলোজেন। অ্যানাজেন ধাপে চুল জন্মগ্রহণ করে এবং তা দুই থেকে ছয় বছর পর্যন্ত থাকে। ক্যাটাজেন ধাপে নতুন চুল গজায় এবং টেলোজেন ধাপে চুল জন্মানো বন্ধ হয়ে যায়। এটি চুলের জীবনচক্র। হেয়ার গ্রোথের জন্য গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে দারুণ কিছু উপায়। চলুন জেনে নেই কোন সে উপায়গুলো-

হেয়ার গ্রোথ সাইকেল

হেয়ার গ্রোথ বাড়ানোর কয়েকটি উপায়
১) স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করা
চুলের বৃদ্ধি হওয়া এবং চুল সুন্দর রাখার অন্যতম শর্ত হচ্ছে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকা। এ জন্য স্ক্যাল্প ম্যাসাজ খুবই জরুরি। নিয়মিত ম্যাসাজ ফলিকলকে স্টিমুলেট করে চুলকে স্ট্রং করে। নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সাথে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল অথবা পেপারমিন্ট অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার একটি বাটিতে গরম পানি নিয়ে তার ভেতর তেলের বাটিটি রেখে গরম করে নিন। এই তেল স্ক্যাল্পে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। চুলে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

২) চুলের আগা কাটা
চুলের আগা ফাটা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। নিয়মিত চুল ট্রিম করলে এই সমস্যা কমানো সম্ভব। দুই বা আড়াই মাস পর পর আগা কাটতে পারেন। এতে হেয়ার গ্রোথ বাড়ে। নিয়মিত ট্রিম করার পাশাপাশি ঘরোয়া হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলেও আগা ফাটা সমস্যা দূর করা সম্ভব।

৩) কন্ডিশনার ব্যবহার করা
শ্যাম্পুর পর অনেকেই কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না। প্রতিবার শ্যাম্পু করার সময় আমাদের চুল থেকে ন্যাচারাল অয়েল ওয়াশ আউট যায়। তাই শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। কন্ডিশনার ড্যামেজ হেয়ার রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত হার্শ শ্যাম্পু চুল শুষ্ক ও দুর্বল করে। চেষ্টা করুন মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে।

৪) ডিমের হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা
চুলের অন্যতম প্রধান উপাদান কেরাটিন প্রোটিন। প্রোটিনের অন্যতম উৎস ডিম আর এটি চুলের ফলিকলকে মজবুত করে। চুলের রুক্ষতা দূর করতেও হেল্প করে ডিম। একটি পাত্রে ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটে নিন। এর সাথে টকদই মেশান। এই মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৫) শক্ত করে চুল না বাঁধা
চুল শক্ত করে বাঁধা চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর। টাইট করে বেনী বা পনিটেইল করার কারণে চুল ভেঙে যেতে পারে। তাই কিছুটা হালকা করে চুল বাঁধা উচিত। একইরকম হেয়ার স্টাইল না করে ভিন্ন ভিন্ন হেয়ার স্টাইলে চুলকে অভ্যস্ত করুন। এতে চুল সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।

৬) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করা
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইনফ্ল্যামেশনের সাথে লড়াই করে এবং চুল পড়া রোধ করে। এটি স্ক্যাল্প সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ, আখরোটে প্রচুর পরিমাণে এই উপাদানটি রয়েছে। এছাড়া ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট খেলেও হেয়ার গ্রোথ হতে হেল্প করবে।

৭) খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি রাখা
চুল পড়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো আয়রনের অভাব। ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণে সাহায্য করে। পরোক্ষভাবে ভিটামিন সি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রাখুন।

৮) বায়োটিন গ্রহণ করা
বায়োটিন হলো এমন একটি ভিটামিন যা হেয়ার গ্রোথ বাড়ায় এবং চুল পড়া রোধ করে। এই ভিটামিন আমাদের শরীরে খাবারকে শক্তিতে রূপান্তর করতে বড় ভূমিকা রাখে। গরুর কলিজা, সয়াবিন, শাক সবজিতে বায়োটিন থাকে। তাই খাদ্য তালিকায় বায়োটিনযুক্ত খাবার রাখুন।

৯) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
পানি কম পান করা হলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এতে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। আর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে চুল পড়া বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন ২/৩ লিটার পানি পান করা উচিত।

১০) নিয়মিত চুল আঁচড়ানো
চুল আঁচড়ালে ফলিকলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এতে অক্সিজেন সাপ্লাই ভালো হয়। তবে অনেকে চিরুনি দিয়ে খুব জোরে জোরে চুল আঁচড়ান। এতে চুল ভেঙে চিরুনিতে চলে আসে। তাই চুল আঁচড়ানোর সময় কিছুটা ধীরে এবং বড় দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *